স্টাফ রিপোর্টার, আব্দুল মতিন মুন্সী : 
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুর–১ আসন (বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা) কে ঘিরে। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের বিএনপির প্রতীক “ধানের শীষ” থেকে প্রার্থী করার তদবির চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরিদপুরের আলোচিত ২০০০ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শেখ মুজিব, সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দীর্ঘদিন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
এছাড়া ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ফরিদপুরের আলোচিত ব্যক্তি আরিফুর রহমান দোলন এখন বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য ঢাকায় তদবির চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তৃণমূল নেতারা জানান, তিনি বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একজন ব্যারিস্টারের মাধ্যমে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ে যোগাযোগ করে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এতে বিএনপির আদর্শিক নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
 সভাপতি এডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলামের বক্তব্য বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ত্যাগ ও আদর্শ নিয়ে বিএনপির রাজনীতি করি। যারা আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে ক্ষমতার সুবিধা নিয়েছে, তাদের বিএনপির প্রতীক দেওয়া হলে তা হবে দলের প্রতি অবিচার।”
সাধারণ সম্পাদক বাবু সঞ্জয় সাহার বক্তব্য উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বাবু সঞ্জয় সাহা বলেন, “বিএনপি একটি আদর্শিক সংগঠন। অর্থের বিনিময়ে এখানে মনোনয়ন পাওয়া যায় না। যারা রাজপথে লড়েছে, পুলিশি নির্যাতন সহ্য করেছে, তারাই প্রাপ্য প্রার্থী। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চয়ই তৃণমূলের এই দাবিকে গুরুত্ব দেবেন।”
 শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আবু জাফর শেখের বক্তব্য বোয়ালমারী উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আবু জাফর শেখ বলেন, ফরিদপুর–১ আসনের মানুষ ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করেছে। এখন যারা আওয়ামী রাজনীতির সুবিধাভোগী ছিল, তারা বিএনপির প্রতীক নিয়ে মাঠে নামতে চায়— এটা তৃণমূল নেতাকর্মীরা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।”
 তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবি তারা বলেন,“দলের ভিতরে-বাইরে কিছু মহল বিএনপিকে বিভ্রান্ত ও দুর্বল করার চেষ্টা করছে। তৃণমূলের কণ্ঠস্বর শোনা না গেলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
রাজনীতির মাঠে ফরিদপুর–১ আসন বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত এলাকা। যেখানে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটির মধ্যেও বিএনপির তৃণমূল কর্মীরা দীর্ঘদিন রাজপথে সংগ্রাম করে আসছে। তাদের এই ক্ষোভ ও প্রতিবাদ দলের জন্য একটি “বার্তা”— যে, অর্থ নয়, ত্যাগী নেতারাই দলের প্রকৃত শক্তি। তৃণমূলের এই অবস্থান যদি কেন্দ্রীয় পর্যায়ে গুরুত্ব পায়, তবে তা বিএনপির আগামী রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
								
															




