মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীকে সতর্ক করলেন বিচারপতি

সোমবার (৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পলাতক চার আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেনকে ট্রাইব্যুনাল সতর্ক করেন যে, “আপনি অনেক কথা বলছেন এবং এমন মন্তব্য করছেন যা আদালতের জন্য বিব্রতকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”

ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বেঞ্চে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রামপুরায় ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা আমির হোসেনকে গুলি করা ও দুজনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেঞ্চের অন্য সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

তৃতীয় নম্বর সাক্ষী হিসেবে আজ শহীদ মো. নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আক্তার নিহা জবানবন্দি দেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামি এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারের আইনজীবী সারওয়ার জাহানের পর তাঁকে জেরা করেন আমির হোসেন। জেরার একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, “এই প্রশ্নে আমাদের আসামিদের লাভ হতে পারে।”

এরপর ট্রাইব্যুনাল আমির হোসেনকে সতর্ক করে বলেন, “আপনি অনেক কথা বলছেন এবং এমন কিছু বলছেন যা আদালতকে বিব্রত করছে। আপনার পূর্ববর্তী প্রশ্নের জন্যও বহু কথা বলা হয়েছিল। আপনার এসব প্রশ্নে আসল লাভ কী? সাক্ষী নিহা একজন ভুক্তভোগী। তার সাক্ষ্যে আপনার আসামিরা মুক্তি পাবেন না।”

ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, “আমরা যদি কোনো ভুল করি, আপনাদের পরবর্তীতে সুযোগ থাকবে। এটি শুধুমাত্র একটি শোনা সাক্ষ্য। তার স্বামী মারা গেছেন, এজন্য সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে।” এই মন্তব্যের পর আমির হোসেন সম্মতি জানান এবং বাকি প্রশ্নের মাধ্যমে জেরা শেষ করেন।

সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নাদিমের স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন তার তিন বছরের ছেলে আনাস বিন নাদিমসহ। তিনি শপথের পর স্বামীর হত্যার সম্পূর্ণ বর্ণনা দেন এবং বিচার দাবি করেন। জেরা করেন আমির হোসেন ও চঞ্চল চন্দ্র সরকারের আইনজীবী সারওয়ার জাহান।

প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সাইমুম রেজা তালুকদার ও অন্যান্যরা।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গ্রেফতার রয়েছেন রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার। হাবিবুর রহমানসহ পলাতক তিন আসামি হলেন খিলগাঁও জোনের সাবেক এডিসি মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান ও রামপুরা থানার সাবেক এসআই তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়া। গত ১০ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।

শেয়ার করুন