বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যশোরের মণিরামপুরে ট্রলির ধাক্কায় শিক্ষক দম্পতির মৃত্যু

আব্দুর রহিম রানা, যশোর প্রতিনিধি : 
যশোরের মণিরামপুরে পাওয়ার টিলারের ট্রলির ধাক্কায় এক শিক্ষক দম্পতি নিহত হয়েছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বাকোশপোল বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা বাজিতপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এ.আর. মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রনজিত কুমার দাস (৪৯) এবং তাঁর স্ত্রী মণিরামপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পাপিয়া দাস (৪০)। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুরে রনজিত দাস মোটরসাইকেলে স্ত্রীকে নিয়ে ঝিকরগাছা থেকে মণিরামপুর যাচ্ছিলেন। পথে বাকোশপোল বাজারে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইঞ্জিনচালিত পাওয়ার টিলারের ট্রলি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং দুজনই ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
খবর পেয়ে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় তাঁদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেন। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রনজিত ও পাপিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাবলুর রহমান খান বলেন, “দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী দুজনই নিহত হয়েছেন। ট্রলিটি জব্দ করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাকোশপোল এলাকায় সড়কটি সরু এবং দুই পাশে দোকানপাট থাকায় প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে। তাঁরা ওই এলাকায় স্পিডব্রেকার স্থাপন ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলির চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন।
রনজিত কুমার দাস দীর্ঘদিন ধরে বাজিতপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এ.আর. মহিলা কলেজে ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা করতেন। সহকর্মীদের ভাষায়, তিনি ছিলেন একজন বিনয়ী ও জনপ্রিয় শিক্ষক। তাঁর মৃত্যুতে কলেজজুড়ে শোক নেমে এসেছে।
অন্যদিকে, পাপিয়া দাস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের একজন পরিশ্রমী ও সৎ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সহকর্মীরা জানান, তিনি দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ছিলেন।
বিকেলে নিহত দম্পতির মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গ থেকে নিজ গ্রাম চাঁদপুরে নেওয়া হয়। সন্ধ্যায় স্থানীয় শ্মশানে তাঁদের দাহ সম্পন্ন হয়।
এই দুর্ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলেছে সড়ক নিরাপত্তা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলির অনিয়ন্ত্রিত চলাচল নিয়ে। স্থানীয়দের মতে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এমন দুর্ঘটনা বাড়তে পারে।
শেয়ার করুন