বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এনসিপি বিএনপির সঙ্গে আসন ও মন্ত্রিসভায় অংশ চান

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিএনপির সঙ্গে সম্ভাব্য জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছে। দলটি বিএনপির সঙ্গে অন্তত ২০টি আসনে সমঝোতা করতে চায় এবং ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের ইচ্ছাও জানিয়েছে।

দুই পক্ষের সূত্রে জানা গেছে, আলোচনাটি এখনো অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে এনসিপি শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাবে, নাকি এককভাবে ভোটে অংশ নেবে—এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, দলের কয়েকজন নেতা ব্যক্তিগতভাবে জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন।

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, এনসিপি শুধু আসন ভাগাভাগি নয়, রাজনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তাও চাইছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিনজন এনসিপি নেতাকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি।

এনসিপি ঢাকাসহ অন্তত ২০টি আসনে সমঝোতায় আগ্রহী। বিএনপি চায়, এনসিপি যেন জামায়াত বা অন্য কোনো ডানপন্থি জোটের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতায় না যায়। দলটির কিছু নেতা চাইছেন, এনসিপি মধ্যপন্থি ভাবমূর্তি বজায় রাখুক।

দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি বলেন, “আমাদের মৌলিক দাবির সঙ্গে যারা কাছাকাছি আছে, এ ধরনের দলের সঙ্গে যদি ঐক্যবদ্ধ হওয়া বা সমঝোতায় যাওয়ার প্রয়োজন হয়, আমরা সেটি বিবেচনা করব।” ইতিমধ্যে এনসিপি কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছে, যার প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এবং সেক্রেটারি তাসনিম জারা। দলটি ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী বাছাই, প্রচারণা ও মাঠপর্যায়ের প্রস্তুতি শুরু করেছে।

নির্বাচনী আসনের প্রস্তুতি অনুযায়ী, আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা-১১ থেকে, সদস্য সচিব আখতার হোসেন রংপুর-৪ থেকে, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ঢাকা-১৮ বা চাঁদপুর-৫ থেকে, তাসনিম জারা ঢাকা-৯ থেকে এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব ঢাকা-১৪ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইছেন। উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়-১ এবং দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ নোয়াখালী-৬ থেকে প্রার্থী হবেন।

এনসিপি এই ২০টির মধ্যে বেশির ভাগ আসনে বিএনপির প্রার্থী তালিকায় নাম থাকলেও ঢাকা-৯ ও ঢাকা-১৮ আসন প্রার্থীদের জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এদিকে, বুধবার (৫ নভেম্বর) নারায়ণগঞ্জে শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে সংস্কার ও জুলাই সনদের দাবির সঙ্গে কোনো দল সমন্বয় করলে জোট বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”

প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের সময় সম্পর্কে তিনি জানান, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে তা ঘোষণা করা হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে তিনটি আসন থেকে লড়বেন, সেই এলাকায় দলের প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়া হবে। এছাড়া সর্বাধিক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

শেয়ার করুন