জলিলুর রহমান, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে বাজারে নতুন করে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন কাঁচাবাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৩ থেকে ৩৭ শতাংশ। খুচরা বাজারে এখন কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহেও মানভেদে পেঁয়াজের দাম ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। এখন সেই পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। এতে সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন।
কাজিপুর মেঘাই বাজারের আড়তদার মো. মোকলেস বলেন, “এক সপ্তাহে আড়তে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি প্রায় ৩০ টাকা বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। আজ রাজশাহীর পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১০২ টাকায়, পাবনার পেঁয়াজ ১০৫ টাকায়।”
সীমান্ত বাজার পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানান, “তিন মাস ধরে বাজারে পেঁয়াজের সংকট চলছে। দেশি পেঁয়াজ প্রায় ফুরিয়েই গেছে বলা যায়। অন্যদিকে ভারতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি প্রায় ১৫ টাকায়। তাই দ্রুত আমদানির অনুমতি না দিলে বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠবে।”
সিরাজগঞ্জ কাঁচাবাজারের আড়তদার মোজিদ হোসেন বলেন, “পাবনা ও ফরিদপুরের আড়ত থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণেই সারা দেশে দাম বেড়েছে। এখন বাজারে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আসছে, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দ্রুত ভারত থেকে আমদানির অনুমতি না দিলে সাধারণ মানুষের জন্য সমস্যা আরও বাড়বে।”
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশে রবি মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ শুরু হয় অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু এ বছর পাবনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ীসহ প্রধান উৎপাদন এলাকাগুলোতে চারা রোপণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। এতে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে আরও দেরি হতে পারে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি মূলত সরবরাহ ঘাটতির ফল। সরকার যদি দ্রুত আমদানির অনুমতি না দেয়, তাহলে পেঁয়াজের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। অন্যদিকে, কৃষকরা বলছেন—সরকারি তদারকি ও সংরক্ষণব্যবস্থা জোরদার করা গেলে ভবিষ্যতে এমন সংকট এড়ানো সম্ভব।
সরবরাহ সংকটের এই সময়ে আমদানির অনুমতি ও বাজার মনিটরিং জোরদার না করলে সাধারণ মানুষকে আরও চড়া দামে পেঁয়াজ কিনতে হতে পারে। পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এখন সরকারের কার্যকর পদক্ষেপই হতে পারে একমাত্র ভরসা।





