নিজাম উদ্দিন, বামনা প্রতিনিধি :
স্কুল-বাজারের ২০ গজের মধ্যে ভাটা বামনা (বরগুনা): বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার লক্ষ্মীপুরা গ্রামে সরকারি নদীর চর থেকে দেদারসে মাটি কেটে নিচ্ছে তিনটি অবৈধ ইটভাটা। পরিবেশ আইন ও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে পরিচালিত মেসার্স ইরা ব্রিকস, মেসার্স পিওর ব্রিকস, ও মেসার্স আর কে বি ব্রিকস-এর ভূমিদস্যুতার কারণে নদী তীরবর্তী এলাকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকাও চরম ঝুঁকিতে পড়েছে।
সরকারি মাটি লুট :
অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই তিনটি ইটভাটার মালিকরা শক্তিশালী বেকু (Excavator) ব্যবহার করে নদী চরের লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি মাটি কেটে বিশাল পল্টনে করে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের ফলে নদীর চর সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে ভূমিধস ও ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এই সরকারি সম্পদ লুট হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
নিয়ম লঙ্ঘন ও জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি :
আইন অনুযায়ী, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বাজারের কাছাকাছি কোনো ইটভাটা স্থাপন করা সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু এই তিনটি ভাটাই সমস্ত নিয়মনীতিকে উপেক্ষা করে পরিচালিত হচ্ছে। রাজারহাট শহীদ বাচ্চু মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাজারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজারহাট বাজার, এবং লক্ষ্মীপুরা ত্রিমুখী বাজার সহ একাধিক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মাত্র ২০ থেকে ৩০ গজের মধ্যে ভাটাগুলি অবস্থিত।
ইটভাটার কালো ধোঁয়া, উড়ন্ত ছাই এবং দূষণ শিশুদের স্বাস্থ্য, বাজারের পরিবেশ এবং এলাকার জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। ভাটাগুলির আইনগত কোনো বৈধতা নেই বলে স্থানীয় প্রশাসনও স্বীকার করেছে।
প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা :
এনকে টিভির পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ নিজাম উদ্দিন হারুন এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এই অবৈধ কার্যকলাপ ও পরিবেশ দূষণের বিষয়টি বারবার প্রতিবেদনে তুলে ধরে প্রশাসনের নজরে এনেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এখন পর্যন্ত ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা অবৈধ কারবারিদের আরও বেপরোয়া করে তুলেছে।”
স্থানীয় জনসাধারণ অবিলম্বে এই অবৈধ ইটভাটাগুলির কার্যক্রম বন্ধ করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের উচ্চমহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।





