রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সিলেট-৫ আসনে নির্বাচনী চিত্র : আধ্যাত্মিক সাধনায় দেওয়াল ঘড়ির প্রার্থী মুফতি আবুল হাসান

আব্দুস শহীদ শাকির, জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :

​আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ আসন সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট)-এ নির্বাচনী উত্তাপ এখন চরমে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল— বিএনপি, জামায়াত ও জমিয়তসহ অন্যান্য প্রার্থীরা দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দিনরাত এক করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন, সভা-সমাবেশ করছেন। ঠিক এই সময়, নির্বাচনের প্রচলিত রীতির বাইরে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী পথে হেঁটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন খেলাফত মজলিস মনোনীত ‘দেওয়াল ঘড়ি’ প্রতীকের প্রার্থী মুফতি আবুল হাসান।

​সাধারণত ভোটের মাঠে প্রার্থীরা যখন নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তখন মুফতি আবুল হাসান রাজনীতির ব্যস্ততা ফেলে অবস্থান করছেন মক্কা ও মদিনার পবিত্র প্রাঙ্গণে। নির্বাচনী ডামাডোল থেকে নিজেকে দূরে রেখে এই আলোচিত প্রার্থী বর্তমানে একদল আল্লাহপ্রেমিক মানুষের সঙ্গে কাবা ও মুজদালিফার প্রান্তর ঘুরে বেড়াচ্ছেন মহান প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাঁর মাঝে বিন্দুমাত্র অস্থিরতা বা হায়-হুতাশ লক্ষ্য করা যায়নি। ​নির্বাচনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রার্থীর এমন আধ্যাত্মিক সাধনাকে প্রাধান্য দেওয়ায় সিলেট-৫ আসনের নির্বাচনী সমীকরণে এক ভিন্ন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।

​মুফতি আবুল হাসান এলাকায় অত্যন্ত পরিচিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তিনি জকিগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ— এমনকি হিন্দু ধর্মের লোকজনও তাকে এক নামে চেনেন এবং আপনজন মনে করেন। মূলত তাঁর এই গভীর ব্যক্তিগত পরিচিতিই তাঁর নির্বাচনী পুঁজি।

​খেলাফত মজলিস তাঁকে দেওয়াল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করলেও, তিনি বিরামহীনভাবে আল্লাহ ও আল্লাহ্‌র রাসূল (সা.)-কে রাজি-খুশি করতে পথ চলছেন। নির্বাচনী প্রচারণার চিরাচরিত কৌশল, যেমন মিছিল বা স্লোগান থেকে দূরে থেকেও তিনিই একমাত্র প্রার্থী, যিনি কোনো দল-মতের পরিচয়ের তোয়াক্কা না করে শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিত্বের জোরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট টানার সম্ভাবনা রাখেন বলে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে আলোচনা চলছে।

​মুফতি আবুল হাসানের এই ব্যতিক্রমী আধ্যাত্মিক পথচলা সিলেট-৫ আসনের ভোটারদের কাছে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, প্রথাগত রাজনীতির বিপরীতে আধ্যাত্মিক সাধনাকে প্রাধান্য দেওয়া এই ব্যতিক্রমী প্রার্থীর পথচলা শেষ পর্যন্ত ভোটের ফলাফলে কতটা প্রভাব ফেলে।

শেয়ার করুন