শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প-জিনপিং বৈঠক শুরু, নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত

দক্ষিণ কোরিয়ায় শুরু হয়েছে ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মুখোমুখি বৈঠক। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠক শুরুর আগে উভয় নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপকালে নতুন সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বৈঠক শুরুর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি আশা করছেন এটি একটি সফল বৈঠক হবে। তিনি উল্লেখ করেন, দুই দেশের সম্পর্ক সব সময়ই ভালো ছিল। জবাবে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, ট্রাম্পকে আবার দেখা সত্যিই দারুণ।

২০১৯ সালে জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলনের সময় দুই নেতা সর্বশেষ সরাসরি সাক্ষাৎ করেছিলেন। এবার তারা এমন এক সময়ে মুখোমুখি হয়েছেন, যখন দুই পরাশক্তির মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা আবারও নতুন মাত্রা পেয়েছে।

বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, আজই কোনো চুক্তি হতে পারে। তিনি বলেন, আমরা পরস্পরকে ভালোভাবে বুঝি।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধ

গত মে মাসে ‘পারস্পরিক শুল্ক যুদ্ধ’ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলেও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রযুক্তি খাতে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখছে, বিশেষ করে এনভিডিয়ার উন্নত চিপ রপ্তানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

বেইজিং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বিরল খনিজ রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এসব বাণিজ্যিক ইস্যুর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা মালিকানাধীন টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

‘বিশ্বের সমস্যাগুলোতে একসঙ্গে দায়িত্ব নিতে পারি’

নিজের বক্তব্যে শি জিনপিং বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বড় দুটি দেশ হিসেবে একসঙ্গে দায়িত্ব নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, দুই দেশের এবং বিশ্বের কল্যাণে আরও বাস্তব ও ইতিবাচক কাজ করতে চাই।

তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্প আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোয় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করতে তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

চীনা প্রেসিডেন্ট জানান, মালয়েশিয়া সফরে ট্রাম্প কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তে শান্তি চুক্তির সাক্ষী হয়েছেন। চীনও ওই সীমান্ত বিরোধ নিরসনে নিজস্ব উদ্যোগ নিয়েছে।

তিনি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক প্রতিদ্বন্দ্বিতার নয়, বরং অংশীদারত্ব ও বন্ধুত্বের হওয়া উচিত। ইতিহাস ও বাস্তবতা তাই দাবি করে।

বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা

বৈঠকে দুই পক্ষের সাতজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত রয়েছেন। মার্কিন দলের নেতৃত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক, হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস এবং চীনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড পারডিউ।

চীনা প্রতিনিধি দলে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওসু, উপ-প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং, চিফ অব স্টাফ কাই চি, বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ঝেং শানজিয়ে।

শেয়ার করুন