সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে আরও ছয় মাস সময় দিয়েছে হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা সময় বাড়ানোর আবেদনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট সাগর–রুনি হত্যা তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই আদেশ অনুযায়ী টাস্কফোর্স গঠন করা হলেও এখনও তদন্ত শেষ হয়নি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও শুনানি
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব। বাদীপক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মো. শিশির মনির এবং রিট আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
বাদীপক্ষ আদালতকে জানান, “দুই দফায় মোট এক বছর সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো লিখিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।”
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “আমরা অন্ধকারে আছি— এত বড় টাস্কফোর্স গঠন হলো, অথচ কোনো অ্যাফিডেভিট বা প্রগতি প্রতিবেদন আদালতে জমা পড়েনি।”
তদন্ত কর্মকর্তাকে ডেকে প্রশ্ন
হাইকোর্টের নির্দেশে আদালতে হাজির হন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজিজুল হক। আদালত তাঁকে প্রশ্ন করেন,
“তেরো বছর পেরিয়ে গেছে, আর কত সময় লাগবে?”
জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন,
“অনেকদূর এগিয়েছে তদন্ত। ইনশা আল্লাহ, ছয় মাসের মধ্যে শেষ করতে পারব।”
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন,
“এটি একটি পুরোনো ও জটিল মামলা। অনেক অভিযুক্তের ঠিকানা পরিবর্তন হয়েছে, কিছু বিদেশে চলে গেছে—তাদের খুঁজে পাওয়া কঠিন।”
তদন্ত কর্মকর্তার আশ্বাস পাওয়ার পর আদালত ছয় মাস সময় মঞ্জুর করেন এবং বলেন,
“এটাই হবে শেষবার—এই সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।”
প্রেক্ষাপট
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। দীর্ঘ ১৩ বছরেও এ মামলার তদন্ত শেষ হয়নি, যা দেশের অন্যতম আলোচিত অসমাপ্ত মামলাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত।





