হ্লাথোয়াইছা চাক, রাবি প্রতিনিধি :
৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা লিখিত পরীক্ষা ‘যৌক্তিক’ সময়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করে ফার্স্ট টাইমারদের প্রতি বৈষম্য করছে।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহবুব আলম বলেন, “৪০ থেকে ৪৬তম বিসিএসের মধ্যে কোনো কোনো লিখিত পরীক্ষায় পিএসসি ৬ মাস, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮ মাস কিংবা ১১ মাস পর্যন্ত সময় দিয়েছে। কিন্তু ৪৭তম বিসিএসের ক্ষেত্রে মাত্র দুই মাস সময় দিচ্ছে—যা ফার্স্ট টাইমারদের জন্য মারাত্মক বৈষম্যমূলক। এই স্বল্প সময়ে সিলেবাস বুঝতেই সময় ফুরিয়ে যাবে, অথচ যারা আগের বিসিএস (৪৫/৪৬তম)-এ লিখিত দিয়েছে, তারা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় দ্বিতীয় ধাপে অতিরিক্ত ১০ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হওয়ায় রিটেন নেওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। এর প্রভাব পড়েছে ৪৭তম বিসিএসের ওপর। ফলে এই প্রিলি পরীক্ষা দুই ধাপে—২৭ জুন এবং ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়, এবং সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে সম্পন্ন হয়। ফল প্রকাশ হয় ২৮ সেপ্টেম্বর। অথচ মাত্র দুই মাস পর, অর্থাৎ ২৭ নভেম্বর থেকেই লিখিত পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে পিএসসি। এটি একেবারেই অযৌক্তিক।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ৪৭তম বিসিএসের পাশাপাশি ৪৯তম বিসিএস প্রক্রিয়াও একই সময়ে চলমান থাকায় শিক্ষার্থীরা কোন পরীক্ষার ওপর বেশি মনোযোগ দেবে তা নির্ধারণে বিভ্রান্ত। ৪৯তম বিসিএসের ভাইভা ২ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে, আর ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে ২৭ নভেম্বর। অর্থাৎ ফার্স্ট টাইমারদের হাতে প্রস্তুতির জন্য কেবল ১৮ দিন সময় থাকবে।
শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্যে আরও দাবি করেন, গত ছয়টি বিসিএসে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষার মধ্যে ব্যবধান কমপক্ষে ২০০ দিনের বেশি ছিল। তাই অন্তত চার মাসের ব্যবধান রেখে ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
এসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমান উল্লাহ আমান বলেন, “জুলাইয়ে বিসিএস কোটাবৈষম্য ইস্যুতে আন্দোলনের পরও এখনও এই ধরনের বৈষম্য চলমান থাকা অযৌক্তিক। আমরা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রথমবার প্রিলি উত্তীর্ণ হয়েছি, কিন্তু লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য যৌক্তিক সময় দিচ্ছে না পিএসসি।”
শিক্ষার্থীরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, পরীক্ষা নির্ধারণে যেন শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য সময় এবং সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। তারা আশা প্রকাশ করেন, পিএসসি তাদের যৌক্তিক দাবিকে বিবেচনা করবে এবং লিখিত পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে যথাযথ সময়সীমা দেবে।





