সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হবিগঞ্জ ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ উৎপাদন কমল ৮৮৬ মেগাওয়াট

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের মাধবপুর নবীগঞ্জ ও সদর উপজেলায় অবস্থিত ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৪টি বন্ধ থাকায় জাতীয় গ্রিডে প্রায় ৮৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। অগ্নিকাণ্ড, যান্ত্রিক ত্রুটি ও চুক্তি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণে কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। জেলার আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা প্রতিদিন ১ হাজার ৭০৬ মেগাওয়াট (কম-বেশি হয়)। তার মধ্যে চারটি বন্ধ থাকায় বাকি চারটি থেকে এখন উৎপাদন হচ্ছে ৮২০ মেগাওয়াট। বাকি ৮৮৬ মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে। মাধবপুরে শাহজিবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র তিন বছর আগে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে বন্ধ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুল মান্নান বলেন, চায়না ও ইউরোপ থেকে মেরামতের যন্ত্রপাতি আনতে সময় লেগেছে; বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে অগ্নিকাণ্ডে কিছু যন্ত্রাংশ আটকা পড়েছে। এজন্য চালু হচ্ছে না। তবে এই নভেম্বরের মধ্যে আংশিকভাবে মেরামত করে অন্তত ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদনে ফেরাতে কাজ চলছে।
শাহজিবাজারের আরও একটি ১০০ মেগাওয়াট প্ল্যান্টও অগ্নিকাণ্ডে কমপ্রেসার বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হতে দেরি হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি সূত্র বলছে, প্ল্যান্টটি দ্রুত ফিরবে, এমন সম্ভাবনা কম।
নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা সাউথ ৩৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র গত আগস্টে গ্যাস টারবাইনের ত্রুটির কারণে উৎপাদন বন্ধ করে। প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, মেরামত প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে; আগামী মার্চে কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর লক্ষ্যে কাজ চলছে। এছাড়া হবিগঞ্জ সদরের নসরতপুরের ১১ মেগাওয়াট কেন্দ্র চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বন্ধ রয়েছে। পুনরায় চালুর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
ইদানীং বিপিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মিলে হবিগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে ৬ লাখ গ্রাহকের জন্য রোজ বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয় কমবেশি ১৫৭ মেগাওয়াট। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে দেওয়া হচ্ছে ১৩৫ মেগাওয়াট। বাকি ২২ মেগাওয়াটের ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে লোডশেডিং দিয়ে। ফলে জেলাজুড়ে মানুষ অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে বিপিডিবির উপসহকারী প্রকৌশলী চয়ন কান্তি সেন বাংলানিউজকে বলেন, ঘাটতি পূরণের জন্য জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ চেয়েও পাই না, কারণ নানা কারণে উৎপাদন কমেছে। তারপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
শেয়ার করুন