সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা

বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে আসামি করে পাঁচটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ মামলাগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়। মামলাগুলোতে সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং জনতা ব্যাংকের কয়েকজন সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ মোট ৩৪ জনকে আসামি করা হবে।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অনুমোদিত মামলাগুলোতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক হাজার ৯৩৯ কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।

আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—সালমান এফ রহমান, তাঁর পুত্র শায়ান এফ রহমান, ভাই ও বেক্সিমকো চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকোর পরিচালক ইকবাল আহমেদ, এমডি ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।

এছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান, পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দীও অভিযুক্ত তালিকায় রয়েছেন।

জনতা ব্যাংকের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত হচ্ছেন—ব্যাংকের সাবেক এমডি আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান ও শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি জিএম আবদুর রহিম ও মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশা, সাবেক এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, মোহাম্মদ শাজাহান ও হুমায়ুন কবির ঢালী।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ এলসি খুলে ভুয়া রপ্তানি দেখিয়ে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করেন। পিয়ারলেস গার্মেন্টস, প্লাটিনাম গার্মেন্টস, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস এবং নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার সমান।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের জুলাই মাসে গ্রেপ্তার হন সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন এবং এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।

শেয়ার করুন