অপু দাস, স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রদূত সংগঠন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী—তার ঐতিহ্যের ৫৭ বছর পূর্তি উদযাপন করল রাজশাহীতে। বুধবার বিকেল থেকে নগরীর আলুপট্টি মোড়ে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের, যা পরিণত হয় সংস্কৃতি, প্রতিবাদ আর মানবতার এক অনন্য উৎসবে।
জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। উদীচী রাজশাহী জেলা সংসদের সভাপতি জুলফিকার আহমেদ গোলাপের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান সোনার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
সভায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান আলী বরজাহান, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোর্শেদ, শ্রমিক নেতা কমরেড হুমায়ুন রেজা জেনু, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সংগঠক শামসুল আবেদিন ডন এবং উদীচীর সহ-সভাপতি অজিত কুমার মণ্ডল।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন নারী নেত্রী কল্পনা রায়, সিপিবি নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিম সরকার লিটন, বাসদ জেলা আহ্বায়ক আলফাজ হোসেন যুবরাজ, উদীচীর সহ-সভাপতি আফতাব হোসেন কাজল ও রতন ভট্টাচার্য, কোষাধ্যক্ষ সন্তোষ কুমার, সহ-সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ দাস ও সাথী আক্তারসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
আলোচনা শেষে সেলিনা বানু, আবু তালেব মোল্লাহ ও প্রফুল্ল প্রামানিকের আবৃত্তিতে মুখরিত হয় অনুষ্ঠানস্থল। এরপর শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হয় খালেদা কেয়ারের নির্দেশনায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত নাটক “রাখাল ছেলে”। সমাপনীতে উদীচীর কণ্ঠশিল্পীরা পরিবেশন করেন হৃদয়স্পর্শী গণসংগীত।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয় কৃষক আন্দোলনের নেত্রী ইলা মিত্র, গণসংগীত শিল্পী সলিল চৌধুরী, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য এবং চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবর্ষ।
সংস্কৃতির চর্চা, মানবিক মূল্যবোধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদীচীর এই আয়োজন ছিল এক অনুপ্রেরণামূলক উদযাপন—সংগীত, আবৃত্তি আর নাটকে গাঁথা এক শিল্পমানবতার আহ্বান।





