রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর বাঘায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূ মুন্নি(২৬)কে শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মিঠু(৩৮) বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগ সুত্রে জানায়, শুক্রবার( ১ নভেম্বর ) ভোর রাত্রি সাড়ে ৪টার দিকে নিহত অনন্যা খাতুন মুন্নী(২৫)কে স্বামী সুরুজ আলী (২৮) সহ যৌতুকের জন্য তার বাড়ীর লোকজন ডিজেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিলে মুন্নির চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান থেকে রেফার্ড মূলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সে মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাঘা থানার মামলা নং-০৪, তারিখ- ০২/১১/২৫ তারিখ, ধারা- ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন( সংশোধনী/২০০৩ ও অধ্যাদেশ/২০২৫) এর ৪(১)/১১(ক) রুজু করা হয়েছে।
স্বানীয়রা জানায়, বাঘা উপজেলার চক নারায়ণপুর গ্রামের মাসুদ রানার মেয়ে মুন্নি খাতুনের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে একই গ্রামের শহিদুল মাঝির ছেলে সুরুজ আলীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সুরুজ আলী দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। নেশার টাকা জোগাড় করতে তিনি প্রায়ই স্ত্রী মুন্নির ওপর নির্যাতন চালাতেন এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে চাপ দিতেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে একই কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাধ হয়।
একপর্যায়ে সুরুজ আলী ধান সেচের জন্য ঘরে রাখা ডিজেল এনে মুন্নির শরীরে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
আগুনে দগ্ধ হয়ে মুন্নি চিৎকার দিলে পরিবারের অন্য সদস্যরা দৌড়ে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে এবং তাকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অখিল পাল তাকে রামেকে পাঠান। খবর শুনে তার বাবা মাসুদ রানা ঢাকার কর্মস্থল থেকে হাসপাতালে আসেন।
এর কিছুক্ষণ পরে বিকেল আনুমানিক ৫টার সময় রামেক হাসপাতালের জরুরী বিভাগে তার মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শঙ্কর বিশ্বাস জানান, শনিবার সকালে মুন্নিকে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। দুপুরে স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার অনুমতি চান, তাই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারও জরুরি বিভাগে আনা হয়। এরপর বিকালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাঘা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আসাদুজ্জামান জানান,এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত চলছে।





