পুলিশে পদোন্নতি ও বদলির তদবিরকে কেন্দ্র করে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় তিনি পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকে নির্দেশ দেন, যেকোনো তদবিরকারী কর্মকর্তার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।
সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অনেক কর্মকর্তা পদোন্নতি বা বদলির জন্য অনুরোধ পান, কিন্তু এগুলো সম্পূর্ণ পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তিনি আরও বলেন, যেকোনো তদবিরের চেষ্টা প্রকাশ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বা বদলির সুযোগ দেওয়া যাবে না।
এক সূত্র জানায়, ২১ অক্টোবর পুলিশ পরিদর্শক পদমর্যাদার ৮০ জনকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিরস্ত্র পরিদর্শক ৩৩ জন, শহর ও যানবাহন পরিদর্শক ১৮ জন এবং সশস্ত্র পরিদর্শক ২৯ জন। এছাড়াও কনস্টেবল থেকে এএসআই ও পরিদর্শক থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি ও বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূলত এই নিয়োগে তদবিরের অভিযোগ উঠেছিল।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদেরও অনুরোধ করেন, যদি কেউ পদোন্নতি-বদলিতে তদবির বা আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ পায়, তা নির্দ্বিধায় প্রকাশ করতে। তিনি বলেন, “এভাবে বদলি-বাণিজ্য বন্ধ করা গেলে জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ায় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গেও মন্তব্য করেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, ওই এলাকায় সমস্যা কিছুটা কমেছে, তবে সম্পূর্ণভাবে নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বুলেটপ্রুফ গাড়ির অনুমোদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রয়োজনে সাংবাদিকদেরও দেওয়া হবে।
সর্বশেষ, সভায় গ্রাহকপ্রতি মোবাইল সিমের সংখ্যা কমিয়ে ৫টি করার প্রস্তাবও অনুমোদিত হয়। নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, কারণ একজনের সিম ব্যবহার করে অপরাধ করলে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি ধরা পড়তে পারে না।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনি, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং আনসার-গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।





