রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচন কমিশনের আচরণ নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না: নাহিদ ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা


জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বর্তমান আচরণ ও কর্মকাণ্ড নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার ঘাটতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে কিছু দলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে, অন্যদিকে কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছে।”

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন অপরিহার্য। বর্তমান ইসির ভূমিকা ও আচরণে পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট। আমরা সরকারকে বলেছি, এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই কমিশন পুনর্গঠনের প্রয়োজন রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডের দায় শেষ পর্যন্ত সরকারের ওপরই বর্তাবে। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা হতে হবে প্রশ্নাতীত।”

জুলাই গণহত্যা ও বিচার নিয়ে অবস্থান

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জুলাই গণহত্যা সম্পর্কিত বিচার কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্যকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা এ জন্য সরকার ও ট্রাইব্যুনালকে ধন্যবাদ জানাই।”

তবে তিনি প্রশ্ন তোলেন, শহীদ ও আহত পরিবারের করা ৮০০’র বেশি মামলার অবস্থান কী? “পত্রপত্রিকায় আমরা দেখছি অভিযুক্তরা জামিনে মুক্তি পাচ্ছে এবং শহীদ ও আহতদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। এই মামলাগুলোর রোডম্যাপ কী হবে, তা প্রকাশ করা উচিত,” বলেন তিনি।

জুলাই সনদে সই প্রসঙ্গে সতর্ক অবস্থান

নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলেও আমরা তাতে অংশ নেই। কারণ, আমরা শুধু কাগজে কলমে কিছু দেখেই সন্তুষ্ট হতে চাই না। বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা না পেলে আমরা সনদে স্বাক্ষর করব না।”

তিনি জানান, সনদের বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সামনে আবারও তুলে ধরা হয়েছে।

প্রশাসন ভাগবাঁটোয়ারার অভিযোগ

প্রশাসনে দলীয় প্রভাবের অভিযোগ তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এসপি, ডিসি এবং প্রশাসনের নানা পর্যায়ে দলীয় ভাগাভাগি চলছে। বড় দলগুলো প্রশাসনিক তালিকা তৈরি করে তা সরকারের কাছে দিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদের ভেতর থেকেও কিছু ব্যক্তি এসব দলকে সহায়তা করছেন।”

তিনি বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। যেসব উপদেষ্টার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।”

শেয়ার করুন