রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আপিলের ৬ষ্ঠ দিনের শুনানি চলছে

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের পর গঠিত আপিলের ৬ষ্ঠ দিনের শুনানি চলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।

রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টা ২০ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।

আদালতে বিএনপির পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন যুক্তি উপস্থাপন করছেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর একই বিষয়ে টানা পঞ্চম দিনের শুনানি শেষ হয়।

এর আগে ২৮ অক্টোবর চতুর্থ দিনের শুনানিতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তারও আগে ২৩ অক্টোবর তৃতীয় দিনের শুনানিতে ইন্টারভেনর হিসেবে বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। দ্বিতীয় দিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২২ অক্টোবর, যেখানে রিটকারী ড. বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে বক্তব্য শেষ করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। প্রথম দিনের শুনানি হয়েছিল ২১ অক্টোবর

এর আগে গত ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগের নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।

পরে এই বিষয়ে আপিল করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ মোট পাঁচজন আবেদনকারী।

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট ওই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।

এর পর ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে, ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন।

এই রায়ের পর ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ করা হয়। পরদিন, ৩ জুলাই, এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়।

পরে সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট, ড. বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান মিলে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে রিভিউ আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও এই বিষয়ে আবেদন করেন।

শেয়ার করুন