সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

জকসু নির্বাচনের তারিখ নিয়ে দিনভর নানা দাবি-পাল্টা অভিযোগ

আশিকুর রহমান, জবি প্রতিনিধি :
নির্বাচন কমিশন গঠনের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জকসু নির্বাচনই এখন সবচেয়ে বড় আলোচনা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রশাসন যে রূপরেখা প্রণয়ন করে, তাতে সম্ভাব্য তারিখ ধরা হয় ২৭ নভেম্বর। কিন্তু গুঞ্জন উঠেছে, নির্বাচন পিছিয়ে ১০ ডিসেম্বরের পর চলে যেতে পারে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান জানিয়েছেন, তফসিল ঘোষণায় আরও কিছু সময় লাগবে।  রোববার উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে মতবিনিময়ের পর সোমবার স্মারকলিপি ও সংবাদ সম্মেলনে তিন ছাত্রসংগঠন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে।
ছাত্রদলের ১২ দফা স্মারকলিপি
শাখা ছাত্রদল প্রধান কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে বলেছে, “আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি ও নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দায়বদ্ধ।”  তারা দাবি করেছে, ভোটার তালিকা ছবিসহ প্রকাশ করতে হবে, অমোচনীয় কালি বাধ্যতামূলক করতে হবে, স্বচ্ছ গ্লাসের ব্যালট বাক্সে আলাদা নম্বর থাকতে হবে, ছাপা ব্যালট, কাস্ট ভোট ও নষ্ট ব্যালটের সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে। ভুল মিডিয়া ট্রায়াল হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে অবাধ স্বাধীনতা দিতে হবে। পোলিং এজেন্ট নিজ কেন্দ্র ছাড়া যেতে পারবে না, প্রার্থীর অনুমতি ছাড়া বদলানো যাবে না।  অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের সুবিধা বিবেচনায় ডাকসু-চাকসু-রাকসু-জাকসুর সময়সূচির সঙ্গে তুলনা করে যথেষ্ট সময় রেখে তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চুক্তি ও প্রচারণা বিধি স্পষ্ট করতে হবে।
অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার দিতে হবে এবং তাদের বাদ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে। ক্রিয়াশীল সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টা আগে বিশেষ কার্ড দিতে হবে। কার্যকরী কমিটির সবাইকে প্রচার ও অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। ছাত্রদলের ঘোষিত ধারাবাহিক কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।  স্মারকলিপিতে শেষ কথা, “নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ, গণতান্ত্রিক ও সুষ্ঠু নির্বাচনে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক। ব্যতিক্রম হলে কোনো গোষ্ঠীর চাপের শিকার বলে প্রতীয়মান হবে।”
 শিবির: ২৭ নভেম্বরেই নির্বাচন করতে হবে।
শাখা শিবিরও স্মারকলিপি দিয়ে বলেছে, “আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, একটি গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন করতে নীলনকশা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন করতে হবে। বিলম্বের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।”  তারা যুক্তি দিয়েছে, ১৩ ডিসেম্বর থেকে ২১তম ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষা, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজন, শীতের ছুটি—২০ ডিসেম্বরের পর কোনো তারিখই সম্ভব নয়। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলে আরও জটিলতা।   শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২৭ নভেম্বরের রোডম্যাপ, ৭ অক্টোবর প্রস্তুতি কমিটি, ২৮ অক্টোবর বিধিমালা পাস, ২৯ অক্টোবর কমিশন গঠন—সবই এই তারিখকে সামনে রেখে।
আপ বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলন
ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আপ বাংলাদেশ সংবাদ সম্মেলন করে। কেন্দ্রীয় সদস্য ও জবি প্রধান সংগঠক মাসুদ রানা বলেন, “আমরা জকসুর দাবিতে অনশন করলে প্রশাসন ‘কিন্তু’ ছাড়া ২৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনশন ভাঙিয়েছিল। এখন একটি মহল পেছানোর পাঁয়তারা করছে।”  তাদের দাবি: নির্বাচন কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, কমিশনের পূর্ণ নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতা, সকল সংগঠনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, অরাজনৈতিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস।  মাসুদ রানা আরও বলেন, “ডিসেম্বরে ভর্তি পরীক্ষা, সেমিস্টার ফাইনাল হবে।২৭ নভেম্বরই মোক্ষম সময়।
শেয়ার করুন