রাজু দত্ত, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :
রাখাল নৃত্যের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বুধবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে শুরু হয়েছে মণিপুরী সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব মহারাসলীলা। দুপুরে ঢাক-ঢোল, খোল-করতাল ও শঙ্খধ্বনির ছন্দে মুখরিত পরিবেশে, আনন্দ-উৎসাহে ভরে ওঠে মণিপুরি পল্লিগুলো।

শ্রীকৃষ্ণ ও সখী রাধার ঐশ্বরিক লীলাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় এই বর্ণিল উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। শিশুদের রাখাল নৃত্য পরিবেশ করতে দেখা যায়। ভক্তরা নৃত্যরত শিল্পীদের বাতাসা ও টাকা উপহার দেন।উৎসব উপলক্ষে নানা ঐতিহ্যবাহী সাজে মেতেছে মণিপুরীপাড়া। মূল রাসলীলা রাত ১১টা থেকে শুরু হয়ে পরের দিন ভোর পর্যন্ত চলবে। বাঁশ ও কাগজ কেটে বিশেষ কারুকাজে রাসের মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। মণ্ডপের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বসেন রাসধারী বা রাসের গুরু, সূত্রধারী ও বাদকরা। পাশাপাশি তিনটি মণ্ডপে তরুণীরা রাসলীলায় অংশ নিয়ে থাকেন।

রাসের সাধারণ ক্রম হচ্ছে সূত্রধারী কর্তৃক রাগালাপ ও বন্দনা, বৃন্দার কৃষ্ণ আবাহন, কৃষ্ণ অভিসার, রাধা ও সখীদের অভিসার, রাধা ও কৃষ্ণের সাক্ষাৎ ও মান-অভিমান, ভঙ্গীপারেং, রাধার কৃষ্ণ-সমর্পণ, যুগলরূপ প্রার্থনা, আরতির মতো বিষয়গুলো।
কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে বেলা ১২টা থেকে শুরু হয় গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য। রাত ১১টায় জোড়া মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে রাসের মূল প্রাণ মহারাসলীলা।
এবার মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে ১৮৩তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্যদিকে কমলগঞ্জের আদমপুরে মণিপুরী মৈতেই সম্প্রদায়ের আয়োজনে ৪০তম রাসোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রাসোৎসবকে ঘিরে মাধবপুর ও আদমপুরের মণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে সাদা কাগজের নকশার নিপুণ কারুকাজে। করা হয়েছে আলোকসজ্জাও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

রাসোৎসবকে কেন্দ্র করে কমলগঞ্জ মণিপুরী সংস্কৃতির এক বিশাল মিলনমেলায় পরিণত হয়। মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, ‘এবার মাধবপুর জোড়া মণ্ডপে ১৮৩তম মহারাসলীলা উপলক্ষে বিকাল সাড়ে তিনটায় শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রদীপ প্রজ্বালনে প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন।’





