শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এআই নিয়ে মানুষের যত ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (Artificial Intelligence)— নামটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত শব্দগুলোর একটি। প্রযুক্তি, শিক্ষা, চিকিৎসা, গণমাধ্যম থেকে শুরু করে ঘরে ব্যবহৃত স্মার্টফোন— সর্বত্রই এখন এআইয়ের উপস্থিতি। কেউ দেখছেন এটি নতুন বিপ্লবের সূচনা হিসেবে, আবার কেউ আশঙ্কা করছেন— এই প্রযুক্তি হয়তো মানুষের চাকরি, সৃজনশীলতা কিংবা গোপনীয়তার জায়গাটা কেড়ে নেবে।

মানুষের জীবনে এআইয়ের প্রভাব

এআই এখন শুধু তথ্যপ্রযুক্তির বিষয় নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে গেছে। সার্চ ইঞ্জিনে প্রশ্ন করলে উত্তর দিচ্ছে চ্যাটবট, ডাক্তারদের সাহায্য করছে রোগ নির্ণয়ে, সাংবাদিকরা ব্যবহার করছেন তথ্য বিশ্লেষণে, এমনকি ছাত্রছাত্রীরাও ব্যবহার করছে পড়াশোনায়। এর ফলে সময় ও পরিশ্রম বাঁচছে, সিদ্ধান্ত নেওয়াও সহজ হচ্ছে।

তবে সমালোচকরা বলছেন, এই সুবিধার আড়ালে রয়েছে নতুন উদ্বেগের ছায়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শেখে মানুষের ডেটা থেকে, ফলে গোপনীয়তা ও তথ্যের নিরাপত্তা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কর্মসংস্থান ও নৈতিকতার প্রশ্ন
সবচেয়ে আলোচিত বিষয়— এআই মানুষের চাকরি কেড়ে নেবে কি না। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, যেসব কাজ বারবার একই ধরণের (repetitive) বা বিশ্লেষণনির্ভর, সেগুলোতে এআই মানুষকে প্রতিস্থাপন করতে পারে। তবে একইসঙ্গে তৈরি হবে নতুন ধরণের পেশা— ডেটা বিশ্লেষণ, প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ারিং, এআই নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইত্যাদি।

নৈতিকতার দিক থেকেও প্রশ্ন উঠেছে— যদি কোনো এআই সিস্টেম ভুল তথ্য দেয় বা ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত নেয়, দায় নেবে কে? মেশিন, প্রোগ্রামার, না ব্যবহারকারী?

সম্ভাবনার দিগন্ত
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিকভাবে ব্যবহৃত হলে এআই মানবসভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে বহুদূর। শিক্ষা খাতে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষাদান, চিকিৎসায় দ্রুত রোগ নির্ণয়, কৃষিতে ফলনের পূর্বাভাস, এমনকি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়ও এআই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রযুক্তিবিদদের মতে, এআই মানুষকে প্রতিস্থাপন করতে আসেনি; বরং মানুষকে আরও সক্ষম করে তুলতেই এর বিকাশ। শর্ত শুধু একটাই— এটি যেন নৈতিক, দায়িত্বশীল ও মানবিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।

ভবিষ্যতের পথে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে এআই ব্যবহারে নীতিমালা তৈরি শুরু করেছে। বাংলাদেশেও সরকারিভাবে এআই নীতি প্রণয়নের আলোচনা চলছে, যাতে প্রযুক্তির সুফল নিশ্চিত করা যায় এবং অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হয়।

শেয়ার করুন