রাজশাহী প্রতিনিধি :
দেশে হৃদরোগ এখন অন্যতম বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মৃত্যুহারের প্রধান কারণ উল্লেখ করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেছেন, হৃদরোগ প্রতিরোধ, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং উন্নত চিকিৎসা সেবায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ‘হৃদরোগ চিকিৎসা ও প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্প্রসারণ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন,
“উত্তরাঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় ফাউন্ডেশনকে আরও শক্তিশালী করতে বার্ষিক সরকারি অনুদান এক কোটি থেকে দুই কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ বেতন এবং ৬০ শতাংশ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সেবার মানোন্নয়নে ব্যয় করা হবে।”
স্বাস্থ্য সচিব আরও বলেন, হৃদরোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় ফাউন্ডেশনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে যাঁরা অবদান রাখছেন, তাঁদের নামে ইউনিট করার প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি আজীবন সদস্য সংখ্যা ও চাঁদার পরিমাণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
“আমিও ফাউন্ডেশনের সদস্য হতে আগ্রহী,” বলেন সচিব। “সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সেবার পরিধি আরও বিস্তৃত করা সম্ভব হবে।” সভায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট রাজশাহীর পরিচালক ও প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক ডা. মো. রইছ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. হাবিবুর রহমান এবং রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এসআইএম রাজিউল করিম।
সভা সঞ্চালনা করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য এনামুল হক এবং স্বাগত বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী। বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সদস্য ডা. মো. ওয়াসিম হোসেন।
সভায় জানানো হয়, ১৯৭৮ সালে সরকারি সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ১৯৮৪ সালে রাজশাহীতে কার্যক্রম শুরু করে। বিশিষ্ট সমাজসেবক ও চিকিৎসক ডা. মো. আব্দুল খালেক ১৯৯২ সালে বাকির মোড়ে ৩১.৪৫ শতক জমি দান করে হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ২০১৮ সালে পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের আওতায় আধুনিক পাঁচতলা ভবন নির্মিত হয়।
বর্তমানে এখানে কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি, আইসিইউ, সিসিইউসহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সভায় বক্তারা বলেন, হৃদরোগ প্রতিরোধে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ফাউন্ডেশনকে আরও আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে সমৃদ্ধ করতে হবে।
তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের হৃদরোগ চিকিৎসা শিগগিরই হবে আরও সহজলভ্য, উন্নত ও কার্যকর।





