রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আল-শারার ও পুতিনের সঙ্গে প্রথম বৈঠক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা প্রথম বৈঠক, তিনি মস্কোর সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান। গতকাল বুধবার মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন তিনি। এটি রাশিয়ায় শারার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে পরিচিত মস্কো। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে আসাদ সিরিয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর ১০ মাস ধরে রাশিয়ার আশ্রয়ে আছেন।

ক্রেমলিনে পুতিনকে আল-শারা বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্কের ধরনটাকে নতুন করে গড়ে তোলা ও পুনঃসংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করছি, যেন সিরিয়ার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক ঐক্য ও অখণ্ডতা এবং স্থিতিশীল নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।’ মস্কোর সঙ্গে করা সব পুরোনো চুক্তি সিরিয়া মেনে চলবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন শারা। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও যৌথ স্বার্থ আছে। আমরা তাদের সঙ্গে করা সব চুক্তির প্রতি সম্মান রাখি।’

আল-শারা এক সময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার প্রধান ছিলেন। তখন তিনি আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি নামে পরিচিত ছিলেন। সিরিয়ার কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাশার আল–আসাদকে সিরিয়ার কাছে হস্তান্তরের জন্য মস্কোর কাছে অনুরোধ জানাতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকটি কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছিলেন শারা।

তবে বৈঠকের শুরুতে টেলিভিশনে আল-শারার সংক্ষিপ্ত যে ভাষণটি প্রচার হয়েছে, তাতে স্পর্শকাতর এ কূটনৈতিক বিষয়টির কোনো উল্লেখ ছিল না।

আল-শারাকে স্বাগত জানিয়ে পুতিন দুই দেশের মধ্যকার কয়েক দশকের ‘বিশেষ সম্পর্কের’ প্রশংসা করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের দাবি, মস্কো সব সময় সিরীয় জনগণের স্বার্থকে বিবেচনায় রাখে এবং তাঁর সরকার এই সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারিত করতে চায়। পুতিন সিরিয়ায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনেরও প্রশংসা করেছেন। বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটি ছিল দেশটির প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচন। পুতিনের মতে, এই প্রক্রিয়াটি সব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যকার সম্পর্ককে দৃঢ় করবে।

শারাকে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি মনে করি এটা আপনার জন্য বড় সাফল্য। কারণ, এর মধ্য দিয়ে সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে সিরিয়া কঠিন সময়ের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও এটি সিরিয়ার সব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ককে দৃঢ় করবে।’ সিরিয়ায় ১৩ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলাকালে সরকারবিরোধী অবস্থানে থাকা শারাদের সঙ্গে  রাশিয়ার সম্পর্কটা ছিল বিপরীতমুখী। তা সত্ত্বেও সিরিয়ার নতুন শাসকেরা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাস্তবমুখী অবস্থান নিয়েছেন। অন্যান্য বিদেশি শক্তির মতো রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখতে চাইছেন তাঁরা।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন এবং সিরিয়ার বর্তমান সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ক্ষেত্রে দামেস্কের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।

শেয়ার করুন