চিফ প্রসিকিউটর বলেন, কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে সাব জেল (অস্থায়ী কারাগার) ঘোষণা করার ক্ষমতা সরকারের রয়েছে। কোন জায়গাটাকে জেল ঘোষণা করবে বা প্রিজন অথরিটির আওতায় নিয়ে আসবে, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। সুতরাং এখানে আমাদের কনসার্ন হওয়ার কোনো বিষয় নয়। আমাদের বক্তব্য হলো, যখন কোনো আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে, তখন এই পরোয়ানাটাকে তামিল করা হবে। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যখন পরোয়ানাটা তামিল করবে, কাউকে গ্রেপ্তার করবে, তখন সরাসরি কাউকে জেলে নেওয়ার কোনো বিধান নেই। কারণ আইন অনুযায়ী আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনতে হবে।
তিনি বলেন, আসামিকে আদালতে আনার পর আদালত যদি (ফার্দার অর্ডার) আদেশ দিয়ে বলেন, তাকে কারাগারে পাঠানো হোক, তখন কেন্দ্রীয় কারাগার বা জাতীয় সংসদ ভবনের মধ্যে, এমপি হোস্টেল হতে পারে, অথবা অন্য কোনো জায়গাকে যদি সরকার কারাগার ঘোষণা করে সেই জায়গায় পাঠানো যেতে পারে। ফলে সেটা কারাগার হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে সেটা আমাদের প্রসিকিউসন বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমাদের বিবেচ্য বিষয় হলো আইন অনুযায়ী কাজটা করতে হবে। আসামিকে গ্রেপ্তার যদি করা হয় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আদালতে আনতে হবে। সেটা সংবিধানে যেমন আছে, আইসিটি আইনে ও সিআরপিসিতেও আছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে। এরপর আদালত যেখানে তাকে রাখতে বলবে সেখানে রাখবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করেছে সরকার। রোববার (১২ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এমইএস বিল্ডিং নম্বর-৫৪’ সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এই আদেশ জারি করা হলো। আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম করে নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আগামী ২২ অক্টোবর তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৮ অক্টোবর এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল।
গুমের এই দুই মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে ২৫ জনই সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা রয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জন অবসরপ্রাপ্ত ও একজন এলপিআরে গেছেন। বাকি ১৫ জন কর্মরত। এরই মধ্যে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।





