বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযান

জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)কে কেন্দ্র করে কর মওকুফ, অনুদান প্রাপ্তি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সিআরআইয়ের চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ মোট আটজনকে এই মামলার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় নাম রয়েছে আরও কয়েকজনের—সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ (বিপু), সিআরআই এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শাব্বির বিন শামস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য রওশন আরা আক্তার, সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম. মোস্তফা কামাল।

দুদকের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা একে অপরের সঙ্গে যোগসাজশ করে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ লঙ্ঘন করে সিআরআইকে অবৈধভাবে কর মওকুফের সুবিধা দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদপ্তরে নিবন্ধিত না থাকায় সরকারি রাজস্বে ক্ষতি হয়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করতে তদবির ও চাপ প্রয়োগ করেছেন। সিআরআইয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে। ২০১৩-১৪ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি অবৈধভাবে ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা আয় করেছে।

অগ্রহণযোগ্য ব্যয় বাদ দিলে সিআরআইয়ের হিসাব অনুযায়ী ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা থাকা উচিত ছিল, তবে প্রকৃত অর্থের পরিমাণ মাত্র ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ টাকা। অর্থাৎ প্রায় ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।

এছাড়া, সিআরআই পরিচালিত ২৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৩৯ কোটি টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকার বেশি জমা হয়েছে এবং ১৯১ কোটি ২১ লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৪২ টাকা আয়কর না দেওয়ায় সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে।

দুদক জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে মানিলন্ডারিংও জড়িত ছিল। তাই দণ্ডবিধি, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন