মীর শাহীন, লালমোহন প্রতিনিধি :
ভোলার লালমোহন উপজেলার নাজিরপুর দারুল আউলিয়া হোসাইনিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন আরবি বিষয়ের প্রভাষক মাওলানা লোকমান হোসেন।
অভিভাবক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ওই মাদ্রাসায় যোগদান করেন (ইনডেক্স নং: M0026917)। কিন্তু যোগদানের পর থেকেই তিনি ক্লাসে অনুপস্থিত। শিক্ষার্থীরা তাকে কখনও মাদ্রাসায় দেখেনি, অথচ নিয়মিতই সরকারি কোষাগার থেকে তোলা হচ্ছে তার বেতন-ভাতা।
একাধিক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের সন্তানরা নিয়মিত ক্লাসে আসে, কিন্তু তাদের আরবি বিষয়ের শিক্ষক আসেন না। বছরের পর বছর পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। অথচ সরকার থেকে তিনি নিয়মিত বেতন তুলছেন— এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, “লোকমান হোসেন নামে কোনো শিক্ষককে আমরা চিনি না। কোনো দিন ক্লাসে আসতে দেখিনি।” স্থানীয় সূত্রের দাবি, প্রভাষক লোকমান বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কর্মরত আছেন। অথচ তিনি লালমোহনের মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে সরকারি বেতন তুলছেন।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল হাসেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এবং ফোনালাপের একপর্যায়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. ফজলুল কবীর আল আযাদ বলেন, “সব বিষয় প্রিন্সিপাল ভালো জানেন। আমি শুনেছি, লোকমান হয়তো অন্যের মাধ্যমে ক্লাস করান। তবে বেতন-ভাতা কে তোলেন, সেটা আমি বলতে পারব না।”
অভিযোগের বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “আমি এ বিষয়ে এখনো কিছু জানি না। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষী প্রভাষকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, এমন অনিয়ম ও দুর্নীতি শিক্ষার মানকে ধ্বংস করছে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করছে।





