বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক বার্তা প্রচারে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা

টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কেউ যদি ধর্মীয়, সাম্প্রদায়িক ঘৃণাপ্রদ বা জাতিগত বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে, তবে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বাধিক ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা, বা উভয় শাস্তির মুখোমুখি হবেন।

এই বিধানগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এর খসড়ায়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বুধবার খসড়াটি প্রকাশ করেছে। খসড়াটি সাধারণ জনগণ এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের মতামত গ্রহণের জন্য বিভাগের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

অধ্যাদেশের ৬৬ ক ধারা অনুযায়ী, যদি কেউ টেলিযোগাযোগ যন্ত্র বা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা বা জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে, সহিংসতা উস্কে দেয়, অপরাধমূলক কার্যক্রমকে প্ররোচিত করে, দেশের সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার চেষ্টা করে, সরকারি বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত সেবাদাতার সার্ভার সিস্টেমে অনুপ্রবেশ বা হ্যাকিং করে, জরুরি যোগাযোগ ব্যবস্থা বা স্যাটেলাইট সেবা বিঘ্নিত করে, অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করে, অথবা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে এমন তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ প্রেরণ করে—তাহলে এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অপরাধীদের সর্বাধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড, ৯৯ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় শাস্তি প্রয়োগ করা হবে।

যদি কোনো টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী এই ধারা অনুযায়ী কমিশনের নির্দেশ তৎক্ষণাৎ কার্যকর না করে, তবে সেটিও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং তার জন্যও সর্বাধিক পাঁচ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৯৯ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় শাস্তি প্রযোজ্য হবে। আইনগতভাবে বিভ্রান্তি থাকলে আদালতের ব্যাখ্যা প্রাধান্য পাবে।

অধ্যাদেশের ৬৯(ক) ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি টেলিযোগাযোগ যন্ত্রের মাধ্যমে অন্যকে অশ্লীল, ভীতি প্রদর্শনমূলক বা অপমানজনক বার্তা পাঠাতে প্রস্তাব দেন, এবং অন্য ব্যক্তি তা পাঠায়, বা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে এ ধরনের বার্তা প্রেরণ করা হয়—তাহলে প্রস্তাবক ও/অথবা প্রেরণকারীকে সর্বাধিক দুই বছর কারাদণ্ড বা ১.৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। গুরুতর অপরাধে সর্বাধিক পাঁচ বছর কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা তিন মাসের অতিরিক্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

ধারা ৭০ অনুযায়ী, যদি কেউ যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত বারবার কারও কাছে টেলিফোন করে যা বিরক্তিকর বা অসুবিধাজনক হয়, তাহলে সেই আচরণ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। দোষী ব্যক্তিকে সর্বাধিক এক লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড বা উভয় শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।

অধ্যাদেশ সংক্রান্ত মতামত পাঠানো যাবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে ই-মেইল: secretary@ptd.gov.bd অথবা ডাকযোগে: সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা ঠিকানায়।

শেয়ার করুন